করোনার কালে বাবসায়িক লাভ ক্ষতির হিসাব!





আমাদের যে কোন অবস্থা দ্রুত মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা সত্যিই অসাধারণ যা নিয়ে অন্য কোনো জাতির সাথে তুলনা হয় না। দীর্ঘ লকদাউন এর ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ হয়ে আছে অনেক দিন, বিশেষ করে উচ্চ শিক্ষা কার্যক্রম। যদিও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলো অনলাইন এ ক্লাস এবং পরীক্ষা নেয়ার বাবস্থা করেছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে এখনো অনলাইন লার্নিং  এর কোন কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছেনা কিন্তু আমাদের বুজতে হবে অনলাইন লার্নিং এর দ্বারা শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব,  এখনই হচ্ছে সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।  অনলাইনে ট্রেনিং বিজনেসের ব্যাপক প্রসার ঘটছে, আগে যারা অনলাইন লার্নিং এর মান নিয়ে সন্ধিহান ছিল তারাও এখন এইদিকে ঝুঁকছে। অনেক প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ট্রেনিং কোর্স চালু করেছে  এবং মানুষ ধীরে ধীরে অভস্থ হচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকবে এবং বলা যায় কয়েক মাসের মধ্যেই হয়ত যারা অফলাইনে ট্রেনিং কোর্স অফার করত তারাও এই মাধ্যমে আসতে বাধ্য হবে। এখন প্রতিদিনই শত শত ওয়েবিনার হচ্ছে।  বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কেউ না কেউ ফ্রী অনলাইন কোর্স অফার করছেন, কেউ আবার পথ দেখাচ্ছেন কিভাবে এই দুর্যোগ পার করা যায়,  কেউবা লাইভ এ আসছেন বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে ক্যারিয়ার সহ অনেক বিষয় আলোচনা করতে এবং মানুষকে জানাতে কেমন হতে পারে কভিড ১৯ পরবর্তী বিশ্ব ।


ভিডিও কনফারেন্স এর ব্যাপক প্রসার হয়েছে। আগে যে বিষয় গুলো আলোচনা করতে বিদেশ ভ্রমণ করতে হতো তা এখন ঘরে বসেই করে ফেলছেন অনেকেই  এবং এই ট্রেন্ড চলতে থাকবে। কোম্পানি গুলোর এই বাবদ খরচ কমবে আর এয়ার লাইনস বা হসপিটলিটি ইন্ডাস্ট্রি গুলোর অবস্থা আরো খারাপ হবে। অনেক ব্যাবসাই  ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে যারা ট্র্যাডিশনাল চ্যানেল এ ব্যাবসা করতো, তারা ও চিন্তা করছে,  কিভাবে এটাকে ডিজিটাল এ ট্রান্সফর্ম করা যায়। এখন সব চেয়ে ভালো সময় যাচ্ছে ই কমার্স ব্যাবসার,  বিশেষ করে যারা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সেল করছেন।  অন্যদের অবস্থা অতোটা ভালো নয়। কিন্তু এই হুজুগে গত দুই মাসে কয়েক হাজার ই কমার্স সাইট লাইভ হয়েছে যার বেশির ভাগ ই গ্রচারী পণ্য নিয়ে, যার ৯০% ই আবার এক বছরের মধ্যে ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হতে পারে। ফেইসবুক এ চলছে মাস্ক, গ্লাভস আর করোনা প্রতিরোধক পণ্যের রমরমা ব্যবসা। এই দুইমাসের মধ্যে হাজার হাজার ফেইসবুক উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। বেশির ভাগ ই সিজনাল ব্যাবসায়ী। বেশির ভাগ পণ্যেরই মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে যদিও প্রায় সবাই তাদের প্রিন্সিপাল কোম্পানির বিভিন্ন সার্টিিকেট প্রদান করছে,  যে তাদের প্রোডাক্ট  ভালো মানের। করোনায় আতঙ্কিত মানুষ দেদারছে কিনছে এবং অনেকেই ঠকছে। 


আবার কিছু ভালো বিষয় হচ্ছে  দেশে মেডিক্যাল প্রোডাক্ট উৎপাদনের ভালো সক্ষমতা তৈরি হয়েছে।  আগে মাস্ক ও পি পি ই  তৈরি করতো গুটি কয়েক্ প্রতিষ্ঠান কিন্তু এখন অনেক উদ্যোক্তা এগিয়ে এসেছেন এই সেক্টরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে। এখন হয়ত দেশের চাহিদা পূরণ করে, রপ্তানি করাও সম্ভব হবে।  আগে ভেন্টিলেটর দেশে তৈরি হতো না কিন্তু এখন অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ নিয়েছেন এই খুব মূল্যবান ও প্রাণরক্ষা কারী মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট উৎপাদন ও বাজারজাত করতে,  যা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য ভালো খবর। করোনা আমাদের অনেক  বড়  চ্যালেঞ্জর মুখোমুখি ও  দাড়  করিয়ে দিয়েছে । অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের রেভিনিউ কমে যাওয়ার কারণে এমপ্লয়ী ছাটাই  করতে বাধ্য হচ্ছে আবার অনেকে স্যালারী কমিয়ে দিচ্ছে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য। কিছু প্রতিষ্ঠান ব্যাবসার ধরন পাল্টে ফেলে বা নতুন চাহিদা সম্পন্ন পণ্য লঞ্চ করে টিকে থাকার চেষ্টা করছে। চারিদিকে দেশে বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মী ছাটাই এর খবর শুনে কর্মীদের মনের মধ্যে একটা ভীতি কাজ করছে, চাকরিটা থাকবে তো! ।

No comments:

Translate

লিচুর রাজ্য ঈশ্বরদীতে

আমাদের গ্রামের রাস্তার দুধারে যত দুর চোখ যায়, শুধু লিচু বাগান চোখে পড়বে, অন্য কোন ফল বাগান বা ফসল খুব একটা দেখা যায় না। লিচুর যখন মুকুল আসে ...

Powered by Blogger.